ইঞ্জিনিয়ার বলতে বুঝায় মানুষের জীবনকে সহজ করার জন্য বৈজ্ঞানিক এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞানের প্রয়োগ।
ডিপ্লোমা হলো একটি ডিগ্রী যেখানে ব্যবহারিক ও তাত্ত্বিক বিষয় সমান গুরুত্বদিয়ে পড়াশুনা করানো
হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পলিটেকনিক বা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ৪ বছর মেয়াদি কোর্স। এস এস সি
পরীক্ষা দেবার পর ছাত্র-ছাত্রী পলিটেকনিক বা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হবার যোগ্যতা
লাভ করে থাকেন।
বিশ্বের যে সব দেশ কারিগরি শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে সেই সব দেশ তত বেশি অর্থনৈতিকভাবে
সমৃদ্ধ হয়েছে। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়নের কর্মধারা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, দেশের
সকল শ্রেণির শিক্ষিত জনগোষ্ঠি সমন্বিত অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখলেও এক্ষেত্রে অগ্রণী
ভূমিকা পালন করে আসছে কারিগরি শিক্ষা ।
বিশেষ করে মধ্যমস্তরের কারিগরি শিক্ষা। অর্থাৎ অর্থনৈতিক উন্নয়নের এটি সরাসরি কারিগরি ও দক্ষ
জনশক্তি ব্যবহারের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠির সম্পৃক্ততার
হারের উপর গড় বাৎসরিক মাথাপিছু আয় নিবিড়ভাবে নির্ভরশীল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কারিগরি
শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করায় আজ তারা উন্নত বিশ্বের কাতারে অবস্থান নিশ্চিত করেছে।
বিশ্বায়নের এই যুগে ইন্ডাস্ট্রির সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। আর এ কারণে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার
গুরুত্ব। নিশ্চিত
কর্মসংস্থানের একমাত্র এবং পরিক্ষিত মাধ্যম হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা। সারা বিশ্বে জেনারেল
শিক্ষার চেয়ে
কারিগরি শিক্ষা বেশ জনপ্রিয় এবং মর্যাদাপূর্ণ।
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে সেমিস্টার পদ্ধতিতে ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি বর্তমান সময়ের সবচেয়ে
সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কেননা এ কোর্স সম্পন্ন করে সরকারি চাকরিতে ২য়
শ্রেণির গেজেটেড কর্মসংস্থা হিসেবে যোগদান করা যায়।
সরকারি-বেসরকারি চাকরির পাশাপাশি বৈদেশিক কর্মসংস্থানেরও রয়েছে যথেষ্ট সুযোগ। আর কেউ উচ্চতর
ডিগ্রি নিতে চাইলে সে সুযোগতো রয়েছেই। ডিপ্লোমা পাশ করার পর ই ঝপ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ
ছাড়াও ২ বছরের AMIE পরীক্ষার মাধ্যমে
B.Sc ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুযোগ।
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর মর্যাদাপূর্ণ চাকরি অথবা পছন্দমত ব্যবসা গ্রহণের সুযোগ
রয়েছে। ডিপ্লোমা কোর্সের সার্টিফিকেট সারা বিশ্বে স্বীকৃত। সেশনজট মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা ।
ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং,ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষাক্রম এর
ক্ষেত্রেঃ
সকল শিক্ষা বোর্ড অথবা বাংলােদশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্টিত
এস.এস.সি/দাখিল/এস.এস.সি
(ভােকেশনাল)/দাখিল (ভােকেশনাল)/সমমানের পরীক্ষায় যে কোন সালে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা কমপক্ষে
জিপিএ
২.০০
নিয়ে আবেদন করতে পারবে।
পলিটেকনিকে পড়তে ইচ্ছুকরা সবাই কিন্তু সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট-এ সুযোগ পায় না। রেজাল্ট,
সিটের স্বল্পতা সহ বিভিন্ন কারণেই তা ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে সামনে চলে আসে
প্রাইভেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটগুলো। কিন্তু অনেকেরই মনে দ্বিধা থাকে যে হয়তো বেসরকারিতে পড়ার
কারণে তার রেজাল্টের মূল্যায়ন হবে না, কিংবা চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হবে। ধারনাটি আসলে
ভুল। সরকারি এবং প্রাইভেট পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যসূচি একই, এমনকি রেজাল্টের মানও একই। যার
ফলে চাকরির ক্ষেত্রে কোন ধরনের বৈষম্যের ব্যাপার থাকে না।
হেডওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে রয়েছে-
সুপরিসর ক্লাস রুম, বিষয় ভিত্তিক আধুনিক ল্যাব ও ফ্রি Wifi সুবিধা
পাঠ্যপুস্তক সমৃদ্ধ বিশাল লাইব্রেরী।
ক্লাস শেষে অতিরিক্ত প্র্যাকটিসের সুবিধা ও ল্যাব সহকারীর সহযোগিতা।
বিনোদন ও শিক্ষা সফরের ব্যবস্থা।
অভিজ্ঞ শিক্ষক/শিক্ষিকা মন্ডলি দ্বারা পরিচালিত।
রুটিন মোতাবেক শতভাগ ক্লাসের নিশ্চয়তা।
মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর দ্বারা ড্রইং ও থিওরি ক্লাসের ব্যবস্থা।
নিয়মিত ক্লাস টেস্ট ও কুইজ টেস্ট এর ব্যবস্থা।
ছাত্র-ছাত্রীরা নিয়মিত ক্লাস করছে কিনা তা মনিটরিং করে অবিভাবককে জানানো।
রাজনীতি ও ধূমপান মুক্ত ক্যাম্পাস।
চাকরি পাওয়া না পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার, এছাড়া কর্মগুনও প্রয়োজন। সরকারি পলিটেকনিক থেকেই যে
শুধুমাত্র চাকরি হয় তা কিন্তু নয়। বে-সরকারী থেকেও পড়াশুনা করে অনেক ভালো জায়গায় জব করা সম্ভব।
তাছাড়া ডিপ্লোমা বিষয়টি হচ্ছে হাতে কলমে শিক্ষার একটা ক্ষেত্র। আপনি আপনার ডিপার্টমেন্ট এর
কাজগুলো ভালো ভাবে শিখুন, কাজ করার দক্ষতা অর্জন করুন, চাকুরি পেতে সমস্যা হবেনা ইনশআল্লাহ।
যারা উচ্চতর ডিগ্রির প্রতি আগ্রহী তারা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলো থেকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং
কোর্স সম্পন্ন করে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য ভর্তি হতে পারেন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি
বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), অ্যাসোসিয়েট মেম্বার অব দ্য ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্সসহ (এএমআইই) এবং
দেশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ ছাড়া রয়েছে বিদেশেও পড়াশোনার সুযোগ। চাকরির পাশাপাশি
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ইভিনিং শিফটে বিএসসি করা যায়। চাকরির পাশাপাশি নিজের উপার্জন
দিয়েই বিএসসি করা সম্ভব। বিএসসি পাস করে আরও ভালো চাকরি পেতেও বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়, কারণ
ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার প্র্যাক্টিক্যাল অভিজ্ঞতা তাদের আছে। ইন্ডাস্ট্রির অভিজ্ঞতা থাকায়
বিএসসির কোর্সগুলো ভালোভাবে আত্মস্থ করতে সুবিধা হয় ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের।।